লোভনীয় কেক থেকে মিষ্টিযুক্ত পানীয়, আপনার বাচ্চা কি খুব বেশি পরিমাণে প্রক্রিয়াজাত মিষ্টি খাচ্ছে? তাহলে, ওকে আটকানোর এটাই ভাল সময় কারণ অতিরিক্ত মিষ্টি আপনার সন্তানের স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকারক হতে পারে। এখানে কিছু প্রশ্ন রয়েছে যার সাহায্যে আপনি বুঝতে পারবেন কেন অতিরিক্ত মিষ্টি জাতীয় খাবার খাবার আপনার সন্তানের স্বাস্থ্যের পক্ষে খারাপ:

প্রশ্ন অতিরিক্ত মিষ্টি খাওয়াটা কেন ভাল নয়?

কোনপ্রকার পুষ্টিকর উপকারীতা ছাড়াই মিষ্টি মেশানো যেকোনও খাবার শিশুর খাদ্যতালিকায় অতিরিক্ত ক্যালোরি যুক্ত করে। অতিরিক্ত মিষ্টিযুক্ত বেশিরভাগ খাবারই মাখন বা মার্জারিন বা সংক্ষিপ্ত আকারে উচ্চ পরিমাণে চর্বি মেশানো থাকে। অতিরিক্ত মিষ্টি খাওয়ার ফলে বিভিন্ন ধরণের শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে: -

  • খারাপ পুষ্টি - অন্যান্য পুষ্টিকর খাবারের পরিবর্তে শিশুকে বিভিন্ন ধরণের মিষ্টিজাত খাবার খাওয়ালে শিশুটি গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি থেকে বঞ্চিত হয়।
  • ওজন বাড়ার প্রবণতা - ওজন বৃদ্ধির মূলে মিষ্টি একটি প্রধান কারণ যা অতিরিক্ত সংখ্যক খালি ক্যালোরির দরুন ওজন বৃদ্ধিতে অবদান রাখে।
  • ট্রাইগ্লিসারাইডের উচ্চ মাত্রা- অতিরিক্ত মিষ্টি খেলে শরীরে অতিরিক্ত চর্বি তৈরী হয়। এর ফলে রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা বেড়ে যায়।
  • দাঁতের ক্ষয় বা ডেন্টাল ক্যারিস - মিষ্টি ব্যাকটেরিয়ার খাদ্য হিসেবে কাজ করে, এর ফলে দাঁতকে ক্ষয় হয় ও ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধিতে বাড়-বাড়ন্ত হয়। এর ফলে দাঁতের ক্ষয় শুরু হতে পারে।

প্রশ্ন খাবারে অতিরিক্ত মিষ্টি আছে কি না আপনি কীভাবে জানবেন?

কোনও খাদ্য পণ্য কেনার পূর্বে পুষ্টি খাদ্য লেবেল খুব সাবধানে পড়ে নেবেন। পুষ্টির লেবেলে পরিষ্কারভাবে পণ্যের প্রতি 100 গ্রামে থাকা মিষ্টি বা চিনির মোট পরিমাণ উল্লেখ করা থাকে। এছাড়াও ক্যাটাগরির অধীনে প্রাকৃতিক মিষ্টি এবং অতিরিক্ত মেশানো মিষ্টির মধ্যে একটি স্পষ্ট সীমানা চিহ্নিত করা রয়েছে।

প্রশ্ন মিষ্টির কিছু সাধারণ উত্স কী কী?

সাধারণ চিনি ছাড়াও কেক, মাফিন, ডোনাট, বিস্কুট, চকোলেট, জ্যাম, ব্রেকফাস্ট খাদ্যশস্য, জুস, এয়ারেটেড ড্রিঙ্কস বা ঢেঁকুর তোলে এমন পানীয় ইত্যাদি। সবগুলোতেই মিষ্টি থাকে।

প্রক্রিয়াজাত খাদ্য আইটেমগুলিতে বিভিন্ন আকারে মিষ্টি থাকতে পারে:

- সুক্রোজ

-ফ্রুকটোজ

- কর্ন সিরাপ

- ডেক্সট্রোজ

- ইনভার্ট সুগার

- মাল্টোজ

- মধু

- মোলাসিস

- হাইড্রোলাইজড স্টার্চ

প্রশ্ন আপনার খাবারে কীভাবে চিনির পরিমাণ কম করবেন?

  • অতিরিক্ত মিষ্টি মেশানো খাবার খাওয়া সীমিত করুন।
  • মিষ্টি পানীয় ও সোডার পরিবর্তে জল, ক্যালরিমুক্ত পানীয় বা দুধ খান।
  • প্যাকেট করা ফলের রস খাকোয়া এড়িয়ে চলুন এবং বাড়িতে 100% প্রাকৃতিক তাজা ফলের রস খান।
  • মধু বা যোগ করা ফল থেকে প্রাপ্ত প্রাকৃতিক শর্করাযুক্ত খাদ্যশস্য গ্রহণ করুন।
  • কেক ও পেস্ট্রির মতো মিষ্টির পরিবর্তে তাজা ফল খান।
  • ভাল আচরণের জন্য শিশুকে মিষ্টি এবং ক্যান্ডি দিয়ে পুরস্কৃত করা এড়িয়ে চলুন।

আপনি যদি আপনার সন্তানের খাদ্যতালিকায় অতিরিক্ত যোগ করা শর্করার পরিমাণ কমাতে পারেন তাহলে আপনি ওদের পুষ্টির সাথে আপস না করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে অতিরিক্ত ক্যালোরি ছেঁটে ফেলতে পারবেন। এই ছোট পদক্ষেপগুলি আপনাকে আপনার সন্তানের জন্য আরও ভাল পুষ্টি নিশ্চিত করতে সাহায্য করতে পারে।