স্কুল পড়ুয়া শিশুরা অনেক সময় শিক্ষামূলক ও পাঠ্যক্রম বহির্ভূত কাজকর্মের কারণে মানসিক চাপে থাকে। এটি আপনার শিশুর নিয়মিত ঘুমে হস্তক্ষেপ করতে পারে। পর্যাপ্ত পুষ্টি না পেলে এই সমস্যা আরও বাড়তে পারে। শুধু তাই নয়, কম্পিউটার, ভিডিও গেম, টেলিভিশন ও মোবাইল ফোনের অতিরিক্ত সংস্পর্শে এসেও তাদের ঘুমের ধরণে ব্যাপক সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।

ঘুম মানবদেহের সুস্থতা ও স্বাভাবিক কর্মক্ষমতার ক্ষেত্রে অপরিহার্য। ন্যাশনাল স্লিপ ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুযায়ী সাধারণত স্কুল পড়ুয়া শিশুদের প্রতিদিন 9-11 ঘণ্টা ঘুম দরকার হয়। অপর্যাপ্ত ঘুম শারীরিক ও মানসিক বিকাশ, প্রভাবমূলক আচরণ, মেজাজ এবং এমনকি শেখার ক্ষমতা উভয়কেই প্রভাবিত করতে পারে। অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপারঅ্যাকটিভিটি ডিসঅর্ডারের (ADHD) মতো আচরণমূলক সমস্যা স্কুল পড়ুয়াদের মধ্যে ঘুমের ধরন খারাপ হওয়ার কারণে হয়ে থাকে। তাই শিশুর পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করতে হবে।

স্কুল পড়ুয়া সন্তানের ঘুমানো সংক্রান্ত কয়েকটি টিপস:

  • শিশুর ঘুমের সময়সূচি নিয়মিতভাবে ঠিক রাখুন
  • আপনার শিশুকে স্বাস্থ্যকর ঘুমনোর অভ্যাসের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করুন
  • ঘুমানোর জন্য প্রস্তুত হওয়ার আগে শিশুকে কম্পিউটার, টিভি ও মোবাইল ফোন থেকে দূরে রাখুন।
  • আপনার বাচ্চার শোওয়ার ঘরে অনুকূল পরিবেশ তৈরি করুন (পর্যাপ্ত অন্ধকার ও নীরবতা)

উপরে উল্লেখ করা টিপসগুলি ছাড়াও, এটি লক্ষ্য করা গুরুত্বপূর্ণ যে খাবার আপনার শিশুর ঘুমের মানের উপরও প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষত ঘুমাতে যাওয়ার আগে আপনার শিশু যা খায়, তা তার ঘুম ও বিশ্রামে প্রভাব ফেলতে পারে।

প্রথমেই বলতে হয়, আপনার বাচ্চার ঘুমনোর আগে ক্ষুধার্ত থাকা উচিত নয়, কারণ খালি পেটে ভালো ঘুম হয় না। যদি আপনার সন্তান আগে খাবার খেলেও ঘুমতে যাওয়ার আগে ক্ষুধার্ত থাকে, তাহলে তাকে ছোটখাট কোনও স্ন্যাক খাওয়ান। এই স্ন্যাকসটি হতে পারে ফাইবার সমৃদ্ধ বা প্রোটিনসমৃদ্ধ, যাতে সুগার লেভেল দ্রুত কমে যেতে না পারে। অন্যথায় আপনার সন্তান আবার এক-দুই ঘণ্টার মধ্যে ক্ষুধার্ত বোধ করবে। কয়েক টুকরো ফল বা একমুঠো বাদাম বা এক টুকরো কটেজ চিজও স্ন্যাক্সের জন্য ভালো বিকল্প হতে পারে।

শিশুদের জন্য ঘুম উদ্রেগকারী খাবার

এক গ্লাস দুধের মতো সহজ কিছু খুব সহজেই ঘুমকে প্ররোচিত করতে পারে এবং আপনার শিশুর পক্ষে স্বস্তিদায়ক হতে পারে। মেলাটোনিনের ভালো উৎস হওয়ায় দুধ ঘুমনো/জেগে ওঠার নিয়মকেও নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। একই উপাদান কলাতেও পাওয়া যায় এবং এটি পেশীগুলিকে শিথিল করতে পারে, তাই আপনার শিশু ভাল ঘুম ঘুমাতে পারে। সতর্কতা বোধ কমানোর জন্য দুধে মধু মেশানো যেতে পারে, যাতে আপনার শিশু সহজেই ঘুমিয়ে পড়ে।

গোটা সিরিয়ালকে ছোট শিশুর ঘুম উদ্রেগকারী ভাল খাবার হিসাবে বিবেচনা করা হয়। আপনি আপনার শিশুকে এক বাটি ওটমিল দিতে পারেন, যা মেলাটোনিনের সমৃদ্ধ উৎস। বিকল্পভাবে, একটুকরো টোস্ট করা হোল-হুইট ব্রেড খেতে দেওয়া যেতে পারে।

হোল হুইটের মধ্যে থাকা ট্রিপ্টোফ্যান নামে অ্যামাইনো অ্যাসিড ঘুমের ওষুধের মতো কাজ করতে পারে। পিনাট ও আমন্ডের মতো বাদাম ট্রিপ্টোফ্যানের ভাল উৎস। আপনার শিশুর খাদ্যতালিকায় আলু অন্তর্ভুক্ত করলে অ্যাসিডের পথ উন্মুক্ত হতে পারে, যা ট্রিপ্টোফ্যানের কাজে বাধা দেয়।

যেসব খাবার ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়

ঘুমানোর আগে আপনার শিশুকে ক্যাফেইন রয়েছে এরকম কোনও খাবার খাওয়াবেন না। চকোলেটে অনেক সময় লুকানো উপাদান হিসেবে ক্যাফেইন উপস্থিত থাকে, যা ঘুম ও জাগরণের নিয়মকে বিঘ্নিত করতে পারে। অন্যান্য ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় যেমন এয়ারেটেড পানীয়, কফি বা চাও ঘুমে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।

উপসংহার হিসাবে বলা যায়,

উপরের টিপসগুলি ছাড়াও, মনে রাখবেন যে, গোট সিরিয়াল ঘুমকে প্ররোচিত করতে পারে, অন্যদিকে হোয়াইট ব্রেড, পাস্তা বা বেকারি খাবারের মতো পরিশোধিত সিরিয়াল সেরোটোনিনের মাত্রা কমিয়ে ঘুমকে বিঘ্নিত করতে পারে। সেরোটোনিন মেলাটোনিনের অনুরূপ এবং এটি একটি হরমোন যা ঘুম / জেগে ওঠার ধারাবাহিক নিয়মে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

তাই, আপনার সন্তানকে ভাল ঘুম ঘুমানোর উপযোগী সঠিক খাবার বাছাই করা প্রধান দায়িত্ব। মনে রাখবেন, ভাল ঘুম ঘুমালে শরীর ও মনও ভাল থাকে। শিশুর বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে এটি আরও বেশি করে জরুরি, যেহেতু শৈশবেই উন্নত ভবিষ্যতের ভিত্তি স্থাপিত হয়। তাই, কোন খাবার ঘুমানোর আগে আপনার শিশুকে খাওয়ানো উচিত এবং কোন খাবারগুলি দূরে রাখা উচিত, সে সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখনই উপযুক্ত সময়।

আনন্দের সাথে বেড়ে ওঠা ও গ্রোয়িং আপ মিল্ক সম্পর্কে আরও জানতে ভিজিট করুন https://www.nestle.in/brands/nestle-lactogrow