ভারতে সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় কারণগুলি প্রায়শই পরিবারের খাদ্যাভ্যাসকে প্রভাবিত করে। আর সেই অনুসারেই শিশুদের লালন-পালন করা হয়। তবে যদি আপনার শিশু শুধুমাত্র নিরামিষ খাবার খায়, তবে তার মধ্যে ভিটামিন B12, জিঙ্ক এবং অন্যান্য মিনারেলগুলির মতো গুরুত্বপূর্ণ নিউট্রিয়েন্টের অভাব হতে পারে যা সাধারণত প্রাণী-ভিত্তিক খাদ্য উৎস থেকে প্রাপ্ত হয়। যেহেতু সুস্থির বৃদ্ধি এবং বিকাশের জন্য সমস্ত প্রয়োজনীয় নিউট্রিয়েন্ট গ্রহণ করা প্রয়োজন, তাই একটি সুষম ডায়েটের পরিকল্পনা করা আবশ্যক। এখানে কয়েকটি উপায় দেওয়া হল, যার মাধ্যমে আপনি নিরামিষভোজী সন্তানের জন্য সুষম খাবার নিশ্চিত করতে পারেন:
- সমস্ত ফুড গ্রুপ থেকে ফুড আইটেম অন্তর্ভুক্ত করুন: এর মানে আপনার সন্তানের ডায়েটে সমস্ত ফুড গ্রুপের গুরুত্বপূর্ণ নিউট্রিয়েন্টগুলি অন্তর্ভুক্ত করা উচিত, যেমন, খাদ্যশস্য, মিলেট, কলাই, দুধজাত দ্রব্য, সবজি, ফল, তেল ও ফ্যাট এবং বাদাম।
- বৃদ্ধির পক্ষে উপযোগী প্রোটিন যোগ করুন: আমিষ খাবারের তুলনায় নিরামিষ খাবারে পর্যাপ্ত প্রোটিন থাকতে পারে না এমন কোনো কারণ নেই। নিরামিষাশী শিশুদের প্রোটিনের উৎস হল দুধ, পনির, সয়া-ভিত্তিক আইটেম, ডাল এবং কলাই।
- এনার্জি-বর্ধক খাবার অন্তর্ভুক্ত করুন: এই বয়সে আপনার সন্তানের সক্রিয় থাকতে এবং স্বাস্থ্যকরভাবে বেড়ে উঠতে প্রচুর এনার্জি প্রয়োজন। এটি নিশ্চিত করতে আপনি তাকে দুধজাত দ্রব্য, ফল এবং সবজি দিতে পারেন। আপনি তার খাদ্যতালিকায় পিনাট বাটার বা আমন্ড বাটার যোগ করার চেষ্টা করতে পারেন। পিনাট বাটারের সাথে কাটা বা কুচি করা আপেলগুলি একটি দুর্দান্ত জলখাবার তৈরি করতে পারে।
- সন্তানকে আয়রন সমৃদ্ধ খাবার দিন: শুঁটি জাতীয় খাবার, সবুজ শাকসবজি, বাদাম, হোল গ্রেইন সিরিয়াল, ড্রাই ফ্রুট ইত্যাদি আয়রন সমৃদ্ধ খাবার, যা শিশুদের রক্তাল্পতা প্রতিরোধে সহায়তা করে। আয়রনের আরও ভালো শোষণ নিশ্চিত করতে, হয় আপনার সন্তানের ডালে বা তরকারিতে লেবুর রস যোগ করুন, অথবা তাকে ব্রেকফাস্টে এক গ্লাস লাইম জুস দিন।
- সন্তানের খাদ্যতালিকায় জিঙ্ক যোগ করুন: আপনার সন্তানের খাদ্যতালিকায় জিঙ্কের প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে আপনি তাকে বাদাম গুঁড়ো, গোটা শস্য বা শুঁটি জাতীয় অবস্থায় দিতে পারেন। উন্নত অনাক্রম্যতা, মানসিক ক্ষমতার উন্নতি, ক্ষত নিরাময় এবং দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতার ঝুঁকি কমানোর জন্য জিঙ্ক অপরিহার্য।
- আপনার শিশুর সুস্থ বৃদ্ধি নিশ্চিত করতে ভিটামিন B12 অন্তর্ভুক্ত করুন: আপনার শিশুকে অবশ্যই ভিটামিন B12 সমৃদ্ধ খাবার দিতে হবে, যেমন দুগ্ধজাত খাবার, ইডলি, দোসা, ধোকলা, আপ্পাম ইত্যাদি। এই ভিটামিনটি ক্লান্তি দূর করবে এবং আপনার সন্তানের রক্ত ও স্নায়ু কোষকে সুস্থ রাখবে।
- ভিটামিন D এবং ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ান: আপনার শিশুকে এই পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবার দেওয়া অপরিহার্য কারণ এগুলো হাড় ও পেশীকে শক্তিশালী করে এবং সংশ্লিষ্ট রোগ প্রতিরোধ করে। এ ক্ষেত্রে সবুজ শাক-সবজি আপনার সন্তানের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করতে পারে। এর পাশাপাশি, আপনার সন্তান যদি বাইরে রোদে খেলে, অন্তত 5 থেকে 10 মিনিট পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন D পেতে পারে।
- আপনার সন্তানের খাদ্যে উপযুক্ত ফ্যাট যোগ করুন: আপনি আপনার শিশুকে নিরামিষ উৎস থেকেও স্বাস্থ্যকর ফ্যাট সরবরাহ করতে পারেন। এর মধ্যে রয়েছে আমন্ড, আখরোট, বাটার, ঘি, দুধ, সয়া ও ভেজিটেবল অয়েল। অস্বাস্থ্যকর কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে এবং ভবিষ্যতে হৃদরোগ প্রতিরোধ করতে স্বাস্থ্যকর ফ্যাটের প্রয়োজন হয়।
এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে সুস্থ বাচ্চা মানেই সুখী বাচ্চা। তাই সন্তান নিরামিষাশী হলেও তার খাবারকে স্বাস্থ্যকর, সুষম ও ভরাট করতে উপরের টিপসগুলো মাথায় রাখতে পারেন। সুষম নিরামিষ খাবার আপনার সন্তানকে তার সমস্ত বৃদ্ধি এবং বিকাশের মাইলফলক অর্জন করতে সাহায্য করতে পারে না পারার কোনও কারণ নেই।
আপনার সন্তানের ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য নিউট্রিয়েন্ট সমৃদ্ধ খাবারের বিকল্পগুলি সম্পর্কে আরও জানতে www.ceregrow.in-এ ভিজিট করুন