মা হিসেবে আমরা সবসময়েই আমাদের শিশুদের বৃদ্ধি এবং খাদ্যাভ্যাস নিয়ে চিন্তিত থাকি - তারা পর্যাপ্ত পরিমাণে খাচ্ছে কি না, আমি তাকে সঠিক পরিমাণে পুষ্টি দিচ্ছি কি না, এই খাবারটি তার উপযুক্ত কি না.... শেষেরটি ক্রমাগত আসতে থাকা একটি প্রশ্ন যা একটু বিশদে ব্যাখ্যা করা প্রয়োজন। এই খাবারটি কি আমার শিশুর জন্য উপযুক্ত নয়? এটি অনেক কিছু বোঝায় - এটি আপনার শিশুর সেই খাবারে অ্যালার্জির মতো গুরুতর হতে পারে, তাদের পক্ষে অন্যান্য খাবারের তুলনায় এটি হজম করা কষ্টকর হতে পারে, এটির স্বাদ পছন্দ না করার মতোই সাধারণ কিছু হতে পারে! এই বিষয়গুলি এবং সেই অন্যযায়ী তাদের প্রত্যুত্তরকে বোঝার বিষয়টি আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, যাতে আপনি আপনার শিশুর চাহিদাটি সঠিকভাবে ধরতে সক্ষম হবেন।
যদিও লক্ষণগুলির মধ্যে কিছু মিল রয়েছে, খাবারের অ্যালার্জি খাবারের প্রতি অসহনশীলতার থেকে অনেকটাই আলাদা। খাব্রের প্রতি অসহনশীলতা হল ল্যাক্টোজের মতো কিছু বিশেষ খাবার সহ্য করার ক্ষেত্রে শিশুর অক্ষমতা, যার ফলে গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনালের লক্ষণ দেখা দিতে পারে। অন্যদিকে, খাবারে অ্যালার্জি হচ্ছে একটি অ্যালার্জেনের প্রতি শরীরের অনাক্রম্যতার প্রতিক্রিয়া।
এই পার্থক্যকে বিস্তারিত ভাবে বোঝানোর জন্য একটি দুর্দান্ত উদাহরণ হল দুধ - একটি সত্যিকারের দুধের অ্যালার্জি দুধের প্রোটিনের প্রতি এবং ল্যাক্টোজের প্রতি অসহনশীলতার থেকে পৃথক। দুধের অ্যালার্জির মতো, অসহনশীলতা রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার সঙ্গে জড়িত নয়। শিশুটির বেড়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে ল্যাক্টওজের প্রতি অসহনশীলতা আরও প্রকট হয়ে ওঠার প্রবণতা থাকে, কিন্তু দুধের অ্যালার্জি একটি বাচ্চার জীবনকালের প্রথম বছরেই বিকশিত হতে পারে।
দুধের প্রোটিন ও ল্যাক্টোজের প্রতি অসহনশীলতার সাধারণ লক্ষণ ও উপসর্গগুলির মধ্যে দুধ কিংবা দুগ্ধজাত দ্রব্য খাওয়ার পরে পেট ফোলা, গ্যাস কিংবা ডায়েরিয়ার মতো হজমের সমস্যাগুলি অন্তর্ভুক্ত। অন্যদিকে, দুধে অ্যালার্জির ফলে অনেক বেশি গুরুতর লক্ষণ দেখা যায়। একবার খেয়ে নেওয়ার পর, লক্ষণগুলি সঙ্গে সঙ্গে কিংবা এক ঘন্টার মধ্যে শুরু হতে পারে, এবং এর মধ্যে নিম্নলিখিত জিনিসগুলি থাকে: হাইভস, একজিমা, কাশি, স্বরের কর্কশতা, বমি, ডায়েরিয়া, ক্র্যাম্প, পেট ফোলা, চোখ চুলকানো, জলে ভরে যাওয়া কিংবা ফুলে যাওয়া, ঠোঁট শক্ত হয়ে যাওয়া, শ্বাসের সমস্যা এবং শ্বাসের সময়ে শব্দ হওয়া। গোরুর দুধে দুটি মূল প্রোটিন থাকে যেটি অ্যালার্জির সংক্রমণের কারণ হতে পারে: ক্যাসেইন, ঘন অংশ (দই)-টিতে পাওয়া যায় যা ঘন করে এবং হুই, দুধের তরল অংশটিতে পাওয়া যায় যা দুধের ঘন অংশটি বাদ দিলে অবশিষ্ট থাকে; শিশুদের দুধের যে কোনো একটি কিংবা উভয় প্রোটিনেই অ্যালার্জি থাকতে পারে।
শেষ পর্যন্ত, দুধের স্বাদ অপছন্দ করা এবং দুধ খেতে জোর করার সময়ে শারীরিক উপায়ের তুলনায় বরং আবেগপূর্ণভাবে প্রতিক্রিয়া দেখানো অনেক শিশুর ক্ষেত্রেই অস্বাভাবিক নয়। এটি পছন্দের ব্যাপার নাকি অসহনশীলতার ব্যাপার সেটি পৃথক করার একটি সহজ উপায় হল যে তারা চিজ, দই, পনিরের মতো দুগ্ধজাত দ্রব্যের প্রতি কীরকম প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে সেটি লক্ষ্য করা। যদি তাদের অসহনশীলতা থাকে, তবে শুধুমাত্র দুধ নয়, তারা দুগ্ধজাত কোনো দ্রব্যই খেতে পারবে না।
এখন আমরা পার্থক্যটা বুঝে গিয়েছি, তাই আপনার শিশুটি খাবারের অ্যালার্জি, অসহনশীলতা কিংবা ঘোর অপছন্দতে ভুগলে সেটি সামলানোর জন্য এখানে কিছু ব্যবহারিক পরামর্শ দেওয়া হল।
- খাবারের অ্যালার্জিকে নিশ্চিত করার জন্য, সবসময় সতর্ক থাকবেন, আপনার শিশুটি কোনো অজানা উৎস থেকে খাবার খাচ্ছে কি না সেই ব্যাপারে সুনিশ্চিত হবেন, বাইরের খাবার এবং প্যাকেটজাত খাবারের প্রতি কড়া নজর রাখবেন, এবং তার চারপাশের সকলকেই তার অ্যালার্জির বিষয়টি সম্পর্কে সচেতন করে দেবেন এবং যদি কোনো অ্যালার্জির খাবার খেয়ে নেয় তাহলে কী করবেন সেটা জানতে হবে।
- উদাহরণস্বরূপ, আপনার শিশুর খাদ্যাভাসটিকে ঠিকঠাক করে নিতে হবে যাতে সেই খাবারগুলির প্রকাশ সর্বনিম্ন হয় এবং পুষ্টির বিকল্প উৎস সেই খাদ্যাভ্যাসের মধ্যে উপলব্ধ থাকে।
- ঘোরভাবে অপছন্দ করা শিশুদের জন্য, খাবারের প্রতি বায়না করার শিশুদের ওপর আমাদের নিবন্ধগুলি দেখুন https://www.asknestle.in/expert-advice/24-fantastic-ways-deal-fussy-eaters