আজকের খাদ্য সংস্কৃতির ভবিষ্যত বিগত কয়েক বছর আগের চাইতে অনেক আলাদা। এমনকি একটি সাধারণ মধ্যাহ্নভোজন আজ কখনই সহজ থাকে না এবং আপনি প্রায়শই এর স্বাদ এবং টেক্সচার পর্যালোচনা করতে পারেন। খাবারের প্রশংসা করার এই ক্ষমতা, কেবল স্বাদই নয়, টেক্সচার এবং সুগন্ধও অল্প বয়সে শুরু হয়ে যায়। আপনি যদি আপনার শিশু বা বাচ্চাকে ভোজন রসিক হওয়াতে উত্সাহিত করেন, তবে মশলাদার খাবার আপনার দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে উঠতে পারে। এই তরুণ ভোজনরসিকরা নতুন খাবার, রেসিপি চেষ্টা করতে এবং বিভিন্ন উপাদানের স্বাস্থ্য উপকারিতা বুঝতে পছন্দ করবে। ওরা কিভাবে রান্না করা হয়, সেদ্ধ করা হয় এগুলি সহ খাবার সম্পর্কে সবকিছু শিখতে পছন্দ করবে। আপনি যদি এই টিপসগুলি অনুসরণ করেন তবে এগুলি মেনে চল্টা খুবই সহজ ব্যাপার:

  1. বাচ্চারা সাধারণত তাদের বাবা-মা যা খায় তাই খেতে পছন্দ করে। সুতরাং আপনি যদি বিভিন্ন ধরণের খাবার তৈরিতে আনন্দ উপভোগ করেন তবে আপনার বাচ্চারাও তেমনটা হবে। এছাড়াও খাবার রান্না করতে এবং রান্নার সাধারণ কায়দা সম্পর্কে শিখতে সাহায্য করার জন্য ওদেরও রান্নাঘরে অন্তর্ভুক্ত করুন।
  2. খাবার সম্পর্কে ওদের কৌতূহলকে উত্সাহিত করার সর্বোত্তম উপায় হল তাদের সাথে নিয়ে রান্না করা। শিশুরা যখন অল্প বয়সে রান্নার কাজ শিখে নেয়, তখন তারা সারা জীবন সেই আবেগকে লালিত করে রাখে। রেসিপি খোঁজা এবং একসাথে রান্না করা আপনার সন্তানের সাথে আপনার বন্ধনকে আরও দৃঢ় করে তুলতে পারে এবং উভয়কেই একটি আগ্রহ শেয়ার করার সুযোগ দিতে পারে।
  3. শুধুমাত্র বাচ্চাদের জন্য রান্নার ক্লাসে যোগদান করে, তাদের খাদ্য নিরাপত্তা, স্টোরেজ, উপস্থাপনা এবং ভবিষ্যত খাদ্য প্রযুক্তি সম্পর্কে শেখানো হবে। রান্নার উপাদানগুলি পরিমাপ করার সাথে সাথে এই অভ্যাসটি ওদের অঙ্কের দক্ষতাকেও বাড়িয়ে তুলবে। এইভাবে, বাচ্চারাও সমমনা তরুণ ভোজনরসিকদের সাথে মেলামেশা করতে পারবে।
  4. এইভাবে, বাচ্চারাও সমমনা তরুণ ভোজনরসিকদের সাথে মেলামেশা করতে পারবে। খাবারের মধ্যে এই সমস্ত গুণাবলীর প্রশংসা করতে তাদের উত্সাহিত করুন।
  5. আপনার বাচ্চাদের বিভিন্ন রেস্তোঁরায় নিয়ে যান এবং তাদের বিভিন্ন স্টাইলে প্রস্তুত করা নতুন খাবার খাওয়ানোর চেষ্টা করুন। রেস্তোঁরায় প্রস্তুত খাবারগুলি বাড়ির খাবারের সাথে তুলনা করতে তাদের উত্সাহিত করুন। খুব ভালো হবে যদি তারা রেস্তোঁরায় প্রস্তুত খাবারগুলি দেখতে পারে এবং আপনি ব্যবহৃত উপাদান এবং রান্নার পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করতে পারেন।
  6. আপনার বাচ্চাকে যতটা সম্ভব বিভিন্ন খাবার, স্বাদ এবং টেক্সচারের সাথে পরিচয় করান। স্থানীয়, পরিচিত খাবারের পাশাপাশি বিভিন্ন দেশ থেকে খাবার চেষ্টা করা থেকে তাদের বাধা দেবেন না।
  7. স্বাদ পছন্দগুলি মায়ের পেটে থাকাকালীন সময় থেকেই বিকাশ শুরু করে। সুতরাং, আপনি যখন গর্ভবতী থাকাকালীন বিভিন্ন ধরনের খাবার খেতে দ্বিধা করবেন না, যদি না আপনার ডাক্তার আপনাকে কিছু না খাওয়ার পরামর্শ দেন।
  8. সুন্দর প্লেটে বা বাটিতে সাজিয়ে খাবার খেতে দিন যাতে বাচ্চারা খাবারের উপস্থাপনার বুঝতে পারে। বাচ্চারা যখন কিশোর বয়সের হয় তখনও উপস্থাপনা সম্পর্কে খুব সচেতন হন। বাচ্চাদের খাবারটি ফ্যানবসি প্লেটে সাজিয়ে পরিবেশন করুন এবং আপনি এর একটা অভিনব নামও দিতে পারেন।
  9. প্রতিটি খাদ্য আইটেমের উত্স সম্পর্কে আপনার শিশুকে অবহিত করুন। তাদের জৈবভাবে উৎপাদিত খাবার খেতে উৎসাহিত করুন।
  10. খাবার নিয়ে কোনো নেতিবাচক মন্তব্য যুক্ত করবেন না। নিজের মত করে বাচ্চাদের খাবার অন্বেষণ করতে দিন।
  11. তারা যেখানেই থাকুক না কেন, তাদের সব ধরণের স্বাদের খাবার পরখ করতে উত্সাহিত করুন, যাতে তারা বিভিন্ন স্বাদের সাথে বিভিন্ন খাবারের উপাদানগুলি যুক্ত করতে পারে।
  12. বাচ্চাদের চিত্তাকর্ষক স্বাদের পরিচিত খাবারে অন্য কিছু খাবার মেশানোর বিষয়টিতে উত্সাহিত করুন, যেমন দইয়ের সাথে শসা, এবং ওদের এমন খাবার পছন্দ কিনা তা জিজ্ঞেসা করুন।
  13. খাবার খাওয়ার জন্য বাচ্চাদের ঘুষ দিয়ে প্ররোচিত করবেন না কারণ তারা পরে এই জাতীয় খাবার খেতে অপছন্দ করবে। কয়েকটি বিকল্প সহ তারা যা পছন্দ করে তা তাদের খেতে দিন। খাবারের সময়টুকু যেন মজাদার ও আরামদায়ক হয়, তা নিশ্চতি করুন।
  14. বাচ্চা যদি কম পরিমাণের খাবার খায় তাহলে সেটা নিয়ে বিশেষ চিন্তা করার প্রয়োজন নেই। ওদের উপর বেশী চাপ প্রয়োগ করলে সেটা সরাসরি জেদের পর্যায় চলে যেতে পারে। বাচ্চারা যা খায় তা যেন স্বাস্থ্যকর হয় এবং ওদের সাপ্তাহিক ডায়েট পর্যাপ্ত হয়, সেটা খেয়াল রাখুন।
  15. আপনার বাচ্চাদের অল্প বয়স থেকেই খাবারের আকার এবং টেক্সচারের প্রশংসা করতে শেখান। এই অভ্যাসটি বাচ্চাদের হাত-চোখের সমন্বয় বিকাশে সাহায্য করবে।
  16. মনে রাখবেন যে খাবারের সময়গুলি সব সময় একই নাও হতে পারে এবং আপনাকে এর মোকাবেলা করতে হবে। বাচ্চাদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা শেখানোর জন্য প্লাস্টিকের ম্যাট, বিব এবং ন্যাপকিন ব্যবহারের কথা শেখান।
  17. মুদির দোকানের কেনাকাটায় সময় আপনার বাচ্চাদের সঙ্গে করে নিয়ে যান এবং তাদের বিভিন্ন শাকসবজি এবং ফলের রঙ, টেক্সচার এবং পণ্যগুলি কোথা থেকে আসে সে সম্পর্কে শেখান।

বাচ্চাদের উৎসাহিত করার জন্য তাদের সামনে উচ্চ প্রযুক্তির খাবার উপস্থাপন করার প্রয়োজন নেই। আমাদের দৈনন্দিন খাবারগুলি, যখন ভালভাবে রান্না করা হয় এবং সুন্দরভাবে সাজিএ গুছিয়ে দেওয়া হয়, তখন বাচ্চাদের চোখ, নাক এবং স্বাদের কুঁড়িও সাড়া দিতে পারে।