বাচ্চার ডে-কেয়ার লাঞ্চ বক্সের জন্য কী প্যাক করতে হবে, তা নিয়ে যদি আপনি প্রতিনিয়ত দুশ্চিন্তায় থাকেন, তাহলে আপনি সঠিক লেখাটি পড়ছেন। আমরা এনেছি এমন কিছু সহজ আইডিয়া, যা তার জন্য স্বাস্থ্যকর ও সুস্বাদু টিফিন প্যাক করতে সাহায্য করবে।
নিরাপদে রাখুন
আপনার শিশুটি যে বিকাশের পর্যায়ে রয়েছে তা বিবেচনা করে, নিরাপদ খাবার খাওয়ানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যার অর্থ আপনাকে খাবার প্যাকিং করার সময় অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। দিনে দুই বা ততোধিক বার খাওয়ানোর পরিকল্পনা করা একটি সাধারণ অভ্যাস কারণ ছোট বাচ্চাদের পেটের পরিসর ছোট এবং তাদের ঘন ঘন কম খাবার খেতে হয়-বেশিরভাগই একবেলার খাবার এবং একবেলার জলখাবার। শক্ত বা তরল খাবার চুইয়ে পড়বে না এবং মাইক্রোওয়েভের গরম সহ্য করতে সক্ষম হবে এমন দৃঢ় পাত্র বেছে নিন। আপনার বাচ্চাকে দম বন্ধ করে দিতে পারে এমন বড় খাবার, আঙ্গুরের মতো ফল, আঠালো এবং শক্ত খাবার যেমন চিক্কি, ক্যান্ডি ইত্যাদি এড়িয়ে চলুন।
খাবার টাটকা রাখুন
খাবার যতটা সম্ভব তাজা অবস্থায় রাখার চেষ্টা করুন। তাপমাত্রার প্রতি সংবেদনশীল খাবারগুলি এড়িয়ে চলুন যা গরম আবহাওয়ায় সহজেই নষ্ট হয়ে যায়, যেমন নারকেল চাটনি ইত্যাদি। যেসব খাবারে আর্দ্রতার পরিমাণ বেশি থাকে (যা ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে) যেমন ডাল, সম্বর ইত্যাদি বিশেষ করে গরমের সময় পচে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
সহজে খাওয়া যায়
বিভিন্ন খাবারকে ছোটোখাটো পাত্রে সরবরাহ করা কেয়ারটেকার এবং সেইসাথে শিশুর জন্য কঠিন হতে পারে, তাই, কম, স্বাস্থ্যকর এবং সহজ খাবার একটি ভাল ধারণা হতে পারে। প্রতিটি খাবারের জন্য আইটেমগুলিকে লেবেল করা প্রতিটি খাবারকে ভালভাবে পরিচালনা করার একটি সহজ গাইড প্রদান করে। খুব বেশি মোড়ানো এড়িয়ে চলুন কারণ এতে করে খাবার অগোছালো হতে পারে। জগাখিচুড়ি কমাতে টিনজাত ফ্রুট জুস বাদ দিন।
সহজ স্বাভাবিক খাবার বাছুন
মনে রাখবেন যে দোকান থেকে কেনা সবচেয়ে সুবিধাজনক স্ন্যাকস এবং খাবারগুলি অগত্যা স্বাস্থ্যকর নয় এবং যেগুলি পুষ্টিকর, সেগুলি ডে কেয়ারের জন্য প্রস্তুত এবং প্যাক করা সুবিধাজনক বা সহজ নাও হতে পারে। তাই কম জটিল উপাদান, বিশেষ করে অজানা উপাদান সহ সাধারণ খাবার বেছে নেওয়াটা একটা ভাল কৌশল। আপনার শিশুর জলীয় চাহিদা যাতে উপেক্ষা না করা হয়, তার জন্য দিনের অন্তত একটি তরল খাবার দেওয়ার কথা বিবেচনা করুন।
নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় যে খাবারগুলি উপভোগ করা হয় তা এমনভাবে সরবরাহ করা উচিত যাতে আপনার শিশুর এটি খাওয়ার মজা নষ্ট না হয়। গরম খাবার গরমাগরম পরিবেশন করতে হবে এবং ঠান্ডা খাবার ঠান্ডা উপভোগ করতে হবে।
নিচে ডে কেয়ার সেন্টারে আপনার শিশুর দিনে খাওয়ার উপযোগী কয়েকটি স্বাস্থ্যকর ও সহজ খাবার এবং জলখাবারের রেসিপি দেওয়া হল:
- তরতাজা নরম ফল বা মিষ্টি সবজির পিউরি (গাজর, মিষ্টি আলু, বিট রুট)
পরামর্শ: ফলের পাল্প বের করার চেষ্টা করুন বা নরম করতে ফল বা ভেজি কিছুটা ব্লাঞ্চ করে দিতে পারেন।
- তাজা গোটা ফল বা লেবুর রসে ভেজানো ফল
ছোট ফল যেমন স্ট্রবেরি, ছোট আপেল, চিকু গোটা দেওয়া যেতে পারে অথবা তাজা লেবুর রস চিপে দেওয়া যেতে পারে যাতে এগুলো বাদামি না হয়।
- জেলি বা জ্যাম মাখানো বাইট সাইজের স্যান্ডউইচ স্কোয়ার
পরামর্শ: স্প্রেডটি এমন হওয়া উচিত যাতে শক্ত দলাগুলি প্রতিরোধ করা যায় যা শ্বাসরোধের ঝুঁকি হতে পারে। শক্ত হলে প্রান্তগুলি কেটে বাদ দিন।
- গোল চাপাটি বিটগুলো ঘি ও চিনিতে ডুবিয়ে নিন
পরামর্শ: টুকরোগুলি ছোট অবস্থায় রাখুন এবং অল্প পরিমাণে চিনি মেশান।
- মিষ্টি আলু ভর্তি ত্রিকোণাকার পরোটা
পরামর্শ: টুকরোগুলি ছোট রাখুন এবং নিয়মিত আলু ব্যবহার করুন তবে পুরটিকে ন্যূনতম মশলাদার রাখুন।
- বাটার দিয়ে ভাজা তারকা আকৃতির ধোসা
পরামর্শ: আকর্ষণীয় আকারে ধোসা তৈরি করুন এবং বাটার দিয়ে হালকাভাবে ভেজে নিন।
- মুগ ডালের খিচুড়ি- নরম, ভালোভাবে সেদ্ধ ও চেটকে নেওয়া
পরামর্শ: একটু ঘি, বাটার এবং ম্যাশ করা, রান্না করা শাকসবজি মেশালে এটিকে সুস্বাদু এবং স্বাস্থ্যকর করে তুলবে। রঙিন শাক-সবজির কম্বিনেশন ব্যবহার করুন।
- ঘি ও গুড় দিয়ে তৈরি বাটন ইডলি
পরামর্শ: সহজে খাওয়ার জন্য ছোট সাইজের ইডলি তৈরি করুন। গ্রেট করা গাজর বা বিটরুট রঙ যোগ করে এবং খেতেও বেশি পুষ্টিকর।
- সুজির পোরিজ
পরামর্শ- সুজি দুধে ভালো করে সেদ্ধ করে গুড় ও ঘি দিয়ে সুস্বাদু করতে হবে।
- পনির বা কটেজ চিজের টুকরো
পরামর্শ- খাওয়ানোর সময় পনির এবং চিজ গুঁড়ো করে নিন। আনসাল্টেড পনির ও চিজই ভালো।
- ডিমের অমলেট
পরামর্শ- কিছু পরিমাণ ফ্যাট ব্যবহার করুন এবং সম্পূর্ণ ডিম ব্যবহার করে অমলেট তৈরি করুন। লবণ এড়িয়ে চলুন কারণ কুসুম সামান্য লবণাক্ত হয়।
- সেদ্ধ ডিম
পরামর্শ- নিশ্চিত করুন ডিম যেন বেশি সেদ্ধ বা কম সিদ্ধ না হয়।
- কিসমিস বা তাজা ফলের সাথে ওটমিল বা রাইস পোরিজ
পরামর্শ- শ্বাসরোধের ঝুঁকি রোধ করতে চেটকে নেওয়া বা হাত দিয়ে চিপে নেওয়া তাজা আঙ্গুর বা কিশমিশ ব্যবহার করা নিরাপদ।
- টাটকা ফ্রুট জুস
পরামর্শ- জুস তৈরিতে যে জল ব্যবহার করা হয়, তা যেন পরিষ্কার থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
বাচ্চারা পুচকে হলেও, তারা আপনার ও আমার মতোই। মনে রাখবেন, তাদের নিজস্ব ইচ্ছা, রুচি ও পছন্দ রয়েছে। তাই, তার ডে কেয়ারের জন্য আপনি যে-খাবারগুলো প্যাক করেন, সেগুলো সুস্বাদু, পেট ভরার উপযোগী ও সেইসঙ্গে পুষ্টিকর হতে হবে। এবারে আপনি আরাম করতে পারেন এবং এখন সেই জেন মা হয়ে উঠতে পারেন, যা আপনি সবসময় হতে চেয়েছিলেন।
আপনার সন্তানের বৃদ্ধি এবং সম্ভাবনা সম্পর্কে আরও জানতে www.nangrow.in -এ যান
আপনার সন্তানের ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য নিউট্রিয়েন্ট সমৃদ্ধ খাবারের বিকল্পগুলি সম্পর্কে আরও জানতে www.ceregrow.in-এ ভিজিট করুন